মন, একটি ছোট্ট শব্দ কিন্তু এর গুরুত্ব অপরিসীম। মনের অসুখ মানে শরীরের অসুখ। মনের অসুখ এর ব্যাপারে মানুষজন খুব একটা সচেতন না, এটাকে খুবই হালকাভাবে দেখে যদিও মনটা শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ তাই একে ছোট ভাবে দেখার কোন অবকাশ নেই। তাই সব সময় মন ভালো রাখার ব্যাপারে আমাদের বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। দৈনন্দিন কর্মব্যস্ত এই জীবনে চলার পথে বিভিন্নভাবে মন তার স্বাভাবিক গতি বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের জন্য ব্যাঘাতগ্রস্থ হয়। আর তখনই মানুষকে ঘিরে ধরে হতাশা, বিষণ্ণতা, অনিদ্রা এবং অনেকেই হারিয়ে ফেলেন জীবনের বেঁচে থাকার মানে। অনেকেই নিতে থাকেন অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট অথবা মন ভালো রাখার ওষুধ। এটাই যে একমাত্র সমাধান এমন নয়।
![বিশ্বব্যাপী, সকল বয়সের প্রায় ২৭ কোটি মানুষ বর্তমানে বিষণ্ণতায় ভুগছেন।](https://doctordekhao.com.bd/blog/wp-content/uploads/2020/08/বিষণ্ণতায়-আক্রান্ত-মোট-জনসংখ্যা-1024x576.png)
এন্টিডিপ্রেসেন্ট গ্রহণ করা মাথা ব্যথার জন্য মাঝে মাঝে পেইন রিলিভার নেওয়ার মতো নয়। আপনি কেবল একটি বড়ি পপ করে গিলে খাবেন আর দ্রুত স্বস্তির অভিজ্ঞতা পাবেন ব্যাপারটা সেরকম নয়। পরবর্তীতে এন্টিডিপ্রেসেন্টগুলির অনেকগুলো সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ এবং ঝুঁকি রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে ড্রাগ গুলি হতে পারে অকার্যকর। ঘন ঘন এন্টিডিপ্রেসেন্ট নেওয়ার অনেকগুলো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। যেমন এসএসআরআই এবং এসএনআরআই এই ওষুধগুলো হতে পারে বমি বমি ভাব, যৌন কর্মহীনতা, ওজন বৃদ্ধি বা ঘুমের সমস্যার কারণ। এছাড়া বুপ্রপিয়ন ওষুধগুলো কিছু লোকের মধ্যে উদ্বেগ এবং আতঙ্কের লক্ষণ গুলিকে আরো বাড়িয়ে তোলে।
এন্টিডিপ্রেসেন্ট ওষুধগুলো সাময়িকভাবে কার্যকর মনে হলেও কিছুদিন ব্যবহারের পর ছেড়ে দিলে বিভিন্ন রকমের উপসর্গ যেমন হতাশা, অবসন্নতা, বিরক্তি, ডায়রিয়া, অনিদ্রা,মাথা ঘোরা, বা ফ্লু এর মত লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে। আপনি যদি সত্যিই হতাশ হন এবং চরম দুঃখ বা উদ্বেগ অনুভব করেন তখন আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। এন্টিডিপ্রেসেন্ট মনের চিকিৎসার মাধ্যম হতে পারে তবে তা কখনোই প্রাথমিক অবস্থায় গ্রহণ করা উচিত নয়। ডায়েট, স্বাভাবিক জীবন যাপনের অনুশীলন এবং মন খুলে কথা বলা হতে পারে মন ভালো রাখার উপায়।
![নিম্ন ও মধ্যম আয়ের শতকরা ৭৬ - ৮৫ জন লোক তাদের মানসিক ব্যাধির জন্য কোনো চিকিৎসা নিয়ে থাকেন না।](https://doctordekhao.com.bd/blog/wp-content/uploads/2020/08/বিষণ্ণতায়-আক্রান্ত-ব্যক্তিদের-পরিসংখ্যান-1024x576.png)
যখন আপনি একটি এন্টিডিপ্রেসেন্ট শুরু করবেন এমনও হতে পারে যে আপনি ভালো বোধ করার পূর্বে আগের তুলনায় অনেক বেশি খারাপ বোধ করবেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এটা হতে পারে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জন্য। অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় আত্মহত্যার প্রবণতা জন্মাচ্ছে। যা দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করে। ডিপ্রেশনের প্রথম চিকিৎসা হলো কথা বলা। আপনি যদি অনেক বেশি অসুস্থ বোধ করেন চেষ্টা করুন আপনার প্রিয়জনের সাথে আপনার মনের কষ্টটা ভাগ করে নিতে অথবা শরণাপন্ন হতে পারেন ডাক্তারের যে আপনার মনের কথাগুলো শুনবে এবং আপনাকে মানসিকভাবে সমর্থন করবে।
ডা উম্মে খায়ের
MBBS, DMU
FCGP, D-asthma